গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: আনোয়ার হোসেন।
গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলমান অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও জরাজীর্ণ ভবনের দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১০টায় গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন পেশার মানুষ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সুধীজন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন গলাচিপা পৌর বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. জিয়াউর রহমান জিয়া, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আরিফ বিল্লাহ, মাও. মো. মাহমুদুল হাসান, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুন্না, রেড ক্রিসেন্ট উপজেলা শাখার দলপ্রধান মো. ফিরোজ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. শাহেদ হোসেন ও মো. শাহেদ আহমেদ জয় প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবায় নানা অনিয়ম চলছে। চিকিৎসক ও নার্সের সংকট, পর্যাপ্ত ওষুধের অভাব এবং ভবনের বেহাল অবস্থার কারণে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তারা আরও বলেন, গলাচিপা হাসপাতালের এখন এমন অবস্থা যে এখানে কেউ চিকিৎসা নিতে আসলে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। নার্স ও ডাক্তারদের আচরণ অনেক সময় রোগীদের প্রতি মানবিক নয়। একটি উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্যকেন্দ্র যদি অচল হয়ে পড়ে, তাহলে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।
পরে গলাচিপা সরকারি কলেজের ছাত্রী নাইমা হক মেঘলা ও তরিকুল ইসলাম মুন্না ৯ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বল্পমেয়াদী কর্মসূচি:
১. আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল ও আশপাশের বর্জ্য অপসারণ।
২. টয়লেট, বাথরুম ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা পরিষ্কার ও ব্যবহার উপযোগী করা।
৩. রোগীদের খাদ্যতালিকা ও সরকারি বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করা।
দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি:
১. ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন।
২. পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংস্কার শুরু।
৩. সিজার, ল্যাব ও এক্স-রে রুম স্থাপন।
৪. আধুনিক স্টোর, ডিজিটাল টোকেন ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন চালু।
৫. ডিউটি মনিটরিং ও দুটি সচল অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিতকরণ।
৬. জরুরি ও বহিঃবিভাগে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম সরবরাহ।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন,
জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্থানীয়ভাবে সংস্কারের যেসব কাজ সম্ভব, তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।

إرسال تعليق