সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



জীবননগর উথলী গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা



মোঃ মিনারুল ইসলাম 

 চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি 




চুৃয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে আপন দুই ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে। 



আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে জীবনগর উপজেলার উথলী গ্রামের ব্রিজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাই আনোয়ার হোসেন মিন্টা (৬৫) ও মো. হামজা (৪৫)। তারা ওই গ্রামের বড় মসজিদপাড়ার মৃত ক্ষুদে মন্ডলের ছেলে।


 এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জীভননগর থানা পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 



স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকালে নিজেদের কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে ব্রিজ মাঠে যান মিন্টা ও হামজা। সেই সময় পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা ৮—১০ জন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর আতর্কিত হামলা চালায়।



 দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলাকারীরা দুই ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় মো. হামজা। এসময় স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় মিন্টাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০ টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।




নিহতদের সেজ ভাই তোতা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে নিজামুদ্দিন খোকা নামের এক ব্যক্তি আমাদের একটি গরু কেনা মুখে বায়না করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দেওয়ায় আমরা গরুটি বিক্রি করে দিই। 



এরপর থেকেই খোকা ও তার লোকজন আমাদের হুমকি দিতে থাকে। এর আগেও একবার হামজা ভাইকে কোপানো হয়েছিল, তখন যশোরে ভর্তি করতে হয়েছিল। সে ঘটনায় কোর্টে মামলা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবার সেই বিরোধের জেরেই ওরা আমার দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলল। 



আমরা আগেই বিষয়টি পুলিশের কাছে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কিছু হয়নি। আজ আমার ভাইরা আর বেঁচে নেই।’




নিহত মিন্টার স্ত্রী আকলিমা খাতুন বলেন, ‘নিজামুদ্দিন খোকা ও তার দুই ছেলে বড় বড় দা হাতে নিয়ে বাড়ির সামনে এসে বলে— ‘দুই ভাইকে মেরে রেখেছি, তোঁরা গিয়ে ওদের লাশ নিয়ে আয়।’


 তারা প্রকাশ্যেই খুন করে আমাদের বাড়ির সামনে এসে ভয় দেখিয়েছে, এবং বড়াই করে হত্যার কথা আমাদেরকে জানিয়ে গেছে।’




সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘রক্তাক্ত ও শঙ্কাজনক অবস্থায় আনোয়ার হোসেন মিন্টা জররি বিভাগে আসে।


 তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া মো. হামজাকে জরুরি বিভাগে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেয়ার পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। হামজার শারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।’




এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মানুন হোসেন বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। হামলাকারীরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। নিহত দুই ভাইয়ের মরদেহ বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।’




এদিকে, দুই ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডে উথলী গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিপক্ষের প্রকাশ্য হামলায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকায় যেন আর কোনো সহিংসতা না ঘটে, সে বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দ্রুত বিচার দাবি করছেন তারা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন