চাঁপাইনবাবগঞ্জে জোড়া বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ, হামলায় আহত ২
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঢোড়বোনায় ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বসতবাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২ যুবক। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের ঢোড়বোনা শিরোটোলা গ্রামের মৃত বাহাদুর মন্ডলের ছেলে জমি ব্যবসায়ী ময়েজ উদ্দিনের (৫৫) বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয় ময়েজ উদ্দিনের দুই ভাতিজা সুজন ও রিপনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। আহত সুজন আলী (২৫) একই গ্রামের নুরুল ইসলাম ভগু মন্ডলের ছেলে ও রিপন আলী (২৪) আব্দুর রাকিবের ছেলে। এসময় বাড়িতে থাকা দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় প্রতিপক্ষরা। এছাড়াও বাড়ির টিভি, ফ্রিজ, দরজাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়৷
হামলা ও মারধরের শিকার পরিবারের সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার সাফু মন্ডলের ছেলে মো. সেন্টুর সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ময়েজ উদ্দিনের। সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্কের অবনতি হলে শুক্রবার সকালে সেন্টু দলবল নিয়ে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ময়েজ উদ্দিনের বাড়িতে হামলা-ভাংচুর চালায়।
এসময় ময়েজ উদ্দিন ও তার ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলে তার দুই ভাতিজা সুজন ও রিপনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরমধ্যে সুজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও রিপন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জমি ব্যবসায়ী ময়েজ উদ্দিনের স্ত্রী এমেলী বেগম বলেন, হঠাৎ করেই সেন্টুর নেতৃত্বে সকালে দলদল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা করে। এসময় তারা বাড়ির সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে স্বামী ও ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এসময় প্রত্যেক ঘরে ঢুকে ভাংচুর ও লুটপাট করে তারা। এমনকি বাড়িতে থাকা দুটি মোটরসাইকেল বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। এখনো আমার স্বামী ও ছেলে বাড়িতে আসতে পারছে না। ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে সেন্টু ও তাদের লোকজন।
ময়েজ উদ্দিনের বোন শরিফা খাতুন জানান, হামলার শিকার হওয়ার পরেও আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাড়ির মধ্যে ঢুকে প্রত্যেক ঘরের সবকিছুর উপর তান্ডব চালিয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। আমরা এর বিচার চাই। দেশে কি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনের শাসন চালু নাই? এমন হামলার পরেও কিভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতে পারে?
আহত সুজন আলীর বাবা নুরুল ইসলাম ভগু বলেন, আমাদের সাথে কোন দ্বন্দ্ব নেই। এমনকি আমরা ঘটনার কিছুই জানি না। কিন্তু ময়েজ ও তার ছেলে না পেয়ে আত্বীয় হওয়ায় আমার ছেলের উপর হামলা করে। তার অবস্থা খুবই গুরুতর। বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে।
হামলা-ভাংচুরের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া। তিনি জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত এনিয়ে থানায় কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
إرسال تعليق