সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



নওগাঁর মহাদেবপুরে নিষিদ্ধ স্বেচ্ছাসেবক লীগ 

নেতা মোখলেছ ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার


মোঃ মিজানুর রহমান মানিক ক্রাইম রিপোর্টার নওগাঁঃ


 মহাদেবপুর থানা পুলিশ ডেভিল হান্টে অভিযান চালিয়ে মোখলেছুর রহমান (৩৬) নামে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি উপজেলা সদরের কলোনীপাড়ার জসীম উদ্দিনের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মহাদেবপুর থানার এসআই আসাদুজ্জামান তাকে স্কুলপাড়া থেকে আটক করে সন্ধ্যায় তাকে নওগাঁ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠান।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মনোয়ার হোসেন জানান, গতবছর ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনকারিদের উপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মোখলেছকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট সকালে মহাদেবপুরের আন্দোলনকারি ছাত্রজনতা উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসের দিকে মিছিল নিয়ে গেলে মোখলেছ ও অন্যরা বিক্ষোভকারিদের চিহ্নিত করতে তাদের ছবি ও ভিডিও করতে যায়। পরে বিক্ষোভকারিদের ধাওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী মোখলেছকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসলেও স্থানীয় কিছু বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে থানা পুলিশ তাকে আটক করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়। 

মহাদেবপুরের নিকোমাস্টার খ্যাত মোখলেছের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের আরো অভিযোগ, ফ্যাসিবাদের আমলে মোখলেছুর রহমান সতীর্থদের নিয়ে একটি শক্তিশালী ক্যাডার বাহিনী গঠন করে পুরো উপজেলা জুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর খবর লেখার যোগ্যতা না থাকলেও এশিয়ান টিভির মহাদেবপুর উপজেলা প্রতিনিধির পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে টিভির লোগো নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজির বড় সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। যেকোন সরকারি অফিসের নিলাম কার্যক্রমে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে নিগোশিয়েশন করে সরকারি কোষাগারে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কম দামে কেনা দেখায়। পরে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এলাকার কোথাও কেউ কোন গাছ কাটলে, পুকুর খনন করলে, মারামারি বা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ সব জায়গাতে গিয়ে নিউজ করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে। এসবের নিউজ কোথাও প্রকাশ হয়না। চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিষয়ে তার দুটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ৫ আগস্টের আগে ও পরে সে বিএনপি ও আন্দোলনকারিদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে। নিজে মৎস্যচাষি না হলেও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকটি ভূয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি/সম্পাদক সেজে অসংখ্য সরকারি খাস পুকুর অবৈধভাবে লিজ নেয়। এসব পুকুরের বেশিরভাগই ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারের সাথে আদালতে মামলা চলমান। এসব পুকুরে কোন মাছের পোনা না ছাড়লেও ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দেয়া মাছ গায়ের জোড়ে লুট করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ছাড়াতে স্থানীয় বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা থানায় গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন