সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্তে জামায়াতের নির্বাচনী সমাবেশ: 'সোনার বাংলা' গড়ার অঙ্গীকার


মোঃ লিয়াকত আলী  

উপজেলা প্রতিনিধি 

  দামুড়হুদা,


জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি এবং নির্বাচনী বার্তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নে এক বিশাল নির্বাচনী সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।


আজ সোমবার (২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫) বিকেলে উপজেলার গয়েসপুর ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।


সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির জননেতা মোঃ রুহুল আমিন।


তিনি তাঁর জ্বালাময়ী বক্তব্যে একটি 'নিরাপদ বাংলাদেশ' এবং স্বপ্নের 'সোনার বাংলা' গড়ার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, "আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই, যেখানে মানুষের জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।


আমার লক্ষ্য একটি সোনার বাংলা গড়া, যা হবে শোষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক।"

তিনি তার এই লক্ষ্যের কার্যকারিতা তুলে ধরে বলেন, "যদি কেউ জানতে চান কীভাবে, তাহলে বলতে চাই, আমরা শুধু কথায় বিশ্বাস করি না, কাজে বিশ্বাস করি।


আমরা ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি, যা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আজ ইসলামী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।


আমরা ইবনে সিনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি, যা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে এবং মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। এছাড়াও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনৈতিক খাতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।"


তিনি আরও বলেন, "আমাদের দল শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই সীমাবদ্ধ নয়, আমরা মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নৈতিক উন্নয়নেও সমানভাবে কাজ করি।


আমাদের উদ্দেশ্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার ন্যায্য অধিকার পাবে এবং একটি সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে।"


সমাবেশ শেষে মোঃ রুহুল আমিন দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গয়েসপুর, গোয়ালপাড়া, নতুনপাড়া, মেদিনীপুর ও হরিহরনগর গ্রামের বাজার এলাকা এবং পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন।


এই সময় তিনি ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করেন, তাদের সমস্যা শোনেন এবং ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার জন্য অনুরোধ জানান।


তার এই গণসংযোগে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে এবং তাদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায়।


সমাবেশে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, যিনি তার বক্তব্যে জামায়াতের আদর্শ ও লক্ষ্যের ওপর আলোকপাত করেন।


জেলা পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক খলিলুর রহমান, যিনি শিক্ষাক্ষেত্রে জামায়াতের অবদান তুলে ধরেন।


এছাড়াও উপস্থিত 

ছিলেন জেলা মাজলিসুল মোফাসসেরিনের সভাপতি মাওলানা হাফিজুর রহমান,

যিনি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জামায়াতের কর্মসূচি ব্যাখ্যা করেন।


উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন উপজেলা আমির মাওলানা সাজেদুর রহমান, উপজেলা নায়েবে আমির হাফেজ বেলাল হোসেন ও মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, এবং উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক। 


তারা সকলেই তাদের বক্তব্যে মোঃ রুহুল আমিনের পক্ষে ভোট চান এবং জামায়াতের বিজয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।


সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আমির আব্দুল ওয়াহেদ এবং অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করেন ইউনিয়ন সেক্রেটারি আলা উদ্দিন।


সমাবেশটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সমাবেশ ছিল না, বরং এটি ছিল জামায়াতে ইসলামীর একটি বড় ধরনের শো-ডাউন, যা আসন্ন নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক শক্তি এবং জনগণের মাঝে তাদের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দেয়।


সমাবেশের আয়োজকরা আশা করছেন, এই সমাবেশ ও গণসংযোগের মাধ্যমে তারা জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের ভোটারদের মন জয় করতে পারবেন এবং নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে পারবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন