সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ



 গুপ্তধন প্রাপ্তি: কার্পাসডাঙ্গায় ব্রিটিশ আমলের ১৮৭৬টি রৌপ্য মুদ্রা উদ্ধার


মোঃ লিয়াকত আলী 

উপজেলা প্রতিনিধি 

       দামুড়হুদা



চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা বাজারে দোকান নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় এক ব্যবসায়ী ১৮৭৬টি প্রাচীন রৌপ্য মুদ্রা খুঁজে পেয়েছেন।



ধারণা করা হচ্ছে, এসব মুদ্রা ব্রিটিশ আমলের এবং এগুলোর বয়স ২০০ বছরেরও বেশি। শনিবার সকালে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।


কার্পাসডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম তাঁর পুরনো দোকানটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। 



শনিবার সকালে দোকানটির ভিত্তি স্থাপনের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় শ্রমিকরা একটি কলসিতে ভরা কিছু বস্তু দেখতে পান। মাটি সরিয়ে কলসটি বের করার পর দেখা যায়, তার মধ্যে শত শত রৌপ্য মুদ্রা রয়েছে। 



প্রথমে শহিদুল ইসলাম স্থানীয়ভাবে বিষয়টি জানতে পারেন এবং পরে তিনি পুলিশকে খবর দেন।


উদ্ধারকৃত মুদ্রাগুলো প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ব্রিটিশ আমলের বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। মুদ্রাগুলোর মধ্যে কিছু ১৮৬৫, ১৯০২ এবং ১৯০৮ সালের অর্থাৎ রানি ভিক্টোরিয়া এবং রাজা এডওয়ার্ডের আমলের।



মোট ১ হাজার ৮৭৬টি মুদ্রা পাওয়া গেছে। এই বিশাল সংখ্যক মুদ্রা একসাথে পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।



এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বহু উৎসুক মানুষ মুদ্রাগুলো দেখতে ভিড় করে।


খবর পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তাৎক্ষণিকভাবে মুদ্রাগুলো সরকারি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন।



বর্তমানে মুদ্রাগুলো দামুড়হুদা উপজেলা ট্রেজারিতে জমা রাখা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মুদ্রাগুলোর প্রকৃত মূল্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব যাচাই করা হবে।


এই গুপ্তধন প্রাপ্তি কেবল একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা নয়, এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক মূল্যবান ঐতিহাসিক বার্তা। এসব মুদ্রা তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরে। 



বিশেষত, এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে নতুন গবেষণার সুযোগ তৈরি হতে পারে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, এ ধরনের আবিষ্কার দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদকে আরও সমৃদ্ধ করবে।


গুপ্তধন প্রাপ্তির এই ঘটনায় কার্পাসডাঙ্গা এবং এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।



তারা আশা করছেন, উদ্ধারকৃত মুদ্রাগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হবে এবং এগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকবে।


একই সাথে, এ ধরনের আবিষ্কার এ অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আরও অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।


​এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে আমাদের দেশের মাটি তার গভীরে লুকিয়ে রেখেছে অসংখ্য অজানা গল্প আর মূল্যবান সম্পদ।

Post a Comment

أحدث أقدم