বাগমারা'য় ডিলার নিয়োগে চাপ,চেয়ারম্যানের হাতে খাদ্য কর্মকর্তা ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত
স্টাফ রিপোর্টার-
রাজশাহীর বাগমারায় উপজেলা'য় দলীয় লোকদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের দাবিতে এবং ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের অভিযোগ তুলে দুই কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে প্রথম আলোর প্রতিনিধির মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়, যদিও পরে তা ফেরত দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটে ১৮ আগস্ট দুপুরে আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ডিএম শাফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে। তিনি বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডিএম জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যান ডিএম শাফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫–২০ জন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কক্ষে গিয়ে ডিলার নিয়োগের দাবি তোলে এবং পূর্বে নিয়োগ পাওয়া দুই পরিবেশকের বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্স জালিয়াতির অভিযোগ আনে। খাদ্য কর্মকর্তা জানান, উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় নতুন নিয়োগ সম্ভব নয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে।
এ সময় খাদ্য পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম উদ্ধার করতে গেলে তাকেও গলা টিপে ধরা হয়। পরে সাংবাদিক মামুনুর রশিদ ভিডিও ধারণ করতে গেলে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে এসে চেয়ারম্যান শাফিকুল ইসলাম নিজেও খাদ্য কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়ে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। পরবর্তীতে তিনি সাংবাদিকের মোবাইল ফেরত দেন। খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেস আমিন বলেন, আদালতের স্থগিতাদেশের বিষয়টি বোঝানোর পরও চেয়ারম্যান ও তার লোকজন নিজেদের অনুগত লোকদের নিয়োগের দাবি তোলে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায়।
চেয়ারম্যান শাফিকুল ইসলাম স্বীকার করেন যে তিনি লোকজন নিয়ে উপজেলা পরিষদে গিয়েছিলেন। তবে তিনি দাবি করেন, আগের দুই পরিবেশক ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স জমা দিয়েছে। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে তিনি খাদ্য কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাশেদুল হক ফিরোজ বলেন, পরিচয় দেওয়ার পরও সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, যদিও পরে তা ফেরত দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, বাগমারা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটানোর আশ্বাস দিয়েছেন।প্রসঙ্গত, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে চেয়ারম্যান শাফিকুল ইসলামকে পূর্বে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আদালতের রায়ে তিনি কয়েক মাস আগে পদে ফেরেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর ও মারামারির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলে বাগমারা থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন