সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



কান্নার জল গানের সুর আর মানবিকতার ছায়া বৃদ্ধাশ্রুমের মায়ামমতা


মোঃ রাসেল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:


এই যেন হাসি আনন্দের ছোট একটুখানি অনুভূতির গল্প বলছি বৃদ্ধাশ্রুম থেকে....

আচ্ছা দাদি, আপনার স্বামীর নাম কী? এই সহজ প্রশ্নের উত্তরে তিনি মাথা নাড়লেন, "জানিনা!" — “আপনার মনে নেই?” "নাহ্, মনে নাই আমার।"

কিন্তু যখন জিজ্ঞেস করা হলো, "ওনার কথা মনে আছে?" তখন যেন স্মৃতির কোনো বন্ধ দরজা খুলে গেলো। "হয়, মনে আছে। আমারে মারছিলো। আমার হাতটা এহনও ব্যথা হরে। জীবনে এটটা চুড়ি কিনগা দেনাই। আমার বাপ-মা মইরাগা গেছে হেইয়া শুইনগাও একটু দ্যাখতে আসে নাই আমার বাপ-মারে..."

চোখের কোণ ঝাপসা। আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা নিঃশব্দ। দাদির কণ্ঠে বেদনার ছাপ, কিন্তু তার মাঝেও ছিল একধরনের সাহস, একা থাকার শক্তি। এমনই গল্প ছিল অন্যান্য মায়েদের যাদের কাউকে রেখে গেছে তাদের নিজের সন্তান,কাউকে ভাই,কেউ স্বামীর বাড়ি থেকে কষ্টের কারণে চলে এসেছে এই বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানায়।ভলান্টিয়ারদের সবার মনে একটাই প্রশ্ন তখন,

তাদের ঠিকানা কেন বৃদ্ধাশ্রম?


এইসব আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে গেল Volunteer For Bangladesh- বরিশাল জেলার উদ্যোগ "মৌসুমের স্নেহ" — একটি মৌসুমি ফল বিতরণ কর্মসূচি, যা রূপ নেয়েছিল এক গভীর মানবিক স্পর্শের যাত্রায়।


স্বেচ্ছাসেবকরা শুধু ফল নিয়ে যাননি; তারা নিয়ে গিয়েছেন সময়, শ্রদ্ধা, স্নেহ, এবং শ্রবণের মনোযোগ। বৃদ্ধাশ্রমের মায়েরা শুধু ফল গ্রহণ করেননি, তারা শুনিয়েছেন গান, কবিতা, জীবনের গল্প আর অভিমানের নীরব দীর্ঘশ্বাস।

কেউ গাইলেন শ্লোক, কেউবা লোকসংগীত, কেউ বললেন এক অচেনা প্রেমের গল্প, কেউ শুধু হাতে হাত ধরে চোখ বন্ধ করে চুপ করে বসে থাকলেন — যেন ফিরে যাচ্ছিলেন কোনো পুরনো দিনে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন