সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ




উলিপুরে অবৈধ ভবন নির্মাণে বাধা, পৌরকর্মীদের ওপর হামলা: একজন গুরুতর আহত


রফিকুল ইসলাম রফিক কুড়িগ্রাম:


কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভায় নিয়ম না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণে বাধা দেওয়ায় পৌরসভার দুই কর্মচারীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


ঘটনাটি ঘটে ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে, উলিপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর রামদাস ধনিরাম এলাকায়।


অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পৌরসভার সহকারী কর নির্ধারক মোঃ রাকিবুল ইসলাম থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান—স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মমিনুল ইসলাম প্লাবনের বাড়ির পাশে মোঃ সাইফুল ইসলাম (৪৫), পিতা-মৃত আব্দুল আজিজ, কোনো অনুমোদন বা পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করে চলেছেন।


জানা যায়, নির্মাণ কাজে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুসরণ করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার সতর্ক করলেও অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বিষয়টি আমলে নেননি। পরে মোঃ মমিনুল ইসলাম প্লাবন এ বিষয়ে উলিপুর পৌর প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।


অভিযোগের প্রেক্ষিতে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহার নির্দেশে পৌরসভার সহকারী কর্মচারী মোঃ গোলাম মোস্তফা (৪৬) ও মোঃ মকবুল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সাইফুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং দুই কর্মচারীর ওপর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এক পর্যায়ে তিনি মোঃ গোলাম মোস্তফাকে নির্মাণাধীন ভবনের একতলা ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।


পরে সহকারী কর নির্ধারক মোঃ রাকিবুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহত গোলাম মোস্তফাকে উদ্ধার করে প্রথমে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তার চারটি দাঁত ভেঙে গেছে এবং বাম হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।


এ ঘটনায় এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সাইফুল ইসলাম এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার পৌরসভার কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে নিজের দাপট আবারও প্রমাণ করলেন তিনি।


এ বিষয়ে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”


পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা বলেন, “পৌর কর্মচারীর ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”


ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে উলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী সাইফুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন