সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



উপজেলা উলিপুর হাতিয়ায় রাস্তার গাছ কাটার অভিযোগ, প্যানেল চেয়ারম্যান সামসুল হক ও বিএনপি নেতার সহযোগিতায় সরকারি সম্পদ লোপাট




উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:


কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বৃহত্তর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া এলাকায় রাস্তার দু’পাশে রোপণকৃত সরকারি গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ সামসুল হক এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মুন্সিপাড়ায় রাস্তার পাশে থাকা প্রায় ২০ থেকে ২২ টি বিভিন্ন ধরনের সরকারি গাছ কেটে নেওয়া হয়। গাছগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। বর্তমান হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী মোঃ শামসুল মেম্বার বলেন এই গাছগুলো সরকারি এবং ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবভুক্ত ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর উপকারে আসছিল।


অভিযোগ রয়েছে, প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ সামসুল মিয়া কোনও ধরনের উপরোক্ত কর্মকর্তাদের না জানিয়ে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত বা স্থানীয়  জনগণের মতামত না নিয়েই স্থানীয়  বিএনপি নেতাদের সুপারিশের   ভিত্তিতে    ইউনিয়ন পরিষদের যার স্মারক   নং ২০২৫ /১৮২  যাহা ১৮/০৬/২০২৫  ইং তারিখে  গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করেন। অভিযুক্ত বিএনপি নেতারা হলেন—ওসমান গনি মুকুল, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল বাতেন ও সাহেব আলী মাস্টার।


এছাড়া সরাসরি গাছ কেটে নিয়ে যান আব্দুল হাই ও তার গং, যাদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ লোপাটের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর দাবি, এসব গাছ কিছু রাতের আঁধারে পরে স্থানীয় পাইকার মাধ্যমে কেটে নেওয়া হয়। এবং আমাদের জানামতে কোন রকম নিলাম বা সরকারি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।


স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপির সদস্য  বাদশা মিয়া বলেন, “এটা আমাদের এলাকাবাসীর সম্পদ ছিল। যারা গাছ কেটে নিয়েছে তারা প্রভাবশালী, কিন্তু প্রশাসনের উচিত এর সঠিক তদন্ত করা। বিএনপি নেতা ওসমান গনির নেতৃত্বে গাছ বিক্রির টাকা  তিনভাগে ভাগ  করা হয়। 


নাম প্রকাশ না করা এক ব্যক্তি বলেন আমি উলিপুর থানা ওসি মহোদয় কে ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু অফিসার আমাকে বলল ইএনও স্যার কে ফোন দিতে। তাই আমি কয়েকবার ইউএনও স্যারকে ফোন দিলেও ফোনটি রিসিভ করেননি।


অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে কয়েকজন সাংবাদিক গেলে জানতে পারি যে এলজিডির অর্থায়নে রাস্তাটির কাজের জন্য ঠিকাদারী দায়িত্ব পান মোঃ মাসুদ রানা। আর ওই সময়ে তাকে পাওয়া গেলে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কে গাছ কাটল বা কারা নিয়ে গেল আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা।


অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারো পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।


উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।


এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন