সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



কুড়িগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার মাদ্রাসা শিক্ষক 


মঙ্গলবার অক্টোবর ১৪, ২০২৫  


মুতাসিম বিল্লাহ তানিম

জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম 


কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে উপজেলার একটি মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রধানের বিরুদ্ধে। 


এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। 


অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (১৪ ই অক্টোবর) দুপুরে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।


উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেফতার মাদ্রাসা শিক্ষকের নাম রিয়াজুল ইসলাম(৪৮)।


 সে উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের আদর্শ বাজার (সরাইপাড়) এলাকার বাসিন্দা। 

ইউনিয়নের আদর্শ বাজারে একটি মাদ্রাসায় (আবাসিক) স্ত্রীসহ বসবাস করেন।


 কয়েকদিন আগে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মাদ্রাসার আবাসিক এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবার।


এর আগে রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে ওই শিক্ষককে আটক করে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। 

পরে চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মধ্য প্রামাণিক পাড়ার একটি মক্তবে আটকে রেখে মারধর করা হয়। 

এ সময় শিক্ষকের স্বীকারোক্তি আদায় করে তা ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। 

খবর পেয়ে রাতেই শিক্ষককে উদ্ধার করে পুলিশ।


ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার বাবা-মা জানান, গত ৫ অক্টোবর রাতে ওই শিক্ষক ছাত্রীকে আবাসিক কক্ষ থেকে নিজ শোবার কক্ষে ডেকে নেয়। 

পরে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এতে বাধা দিলে ছাত্রীর বুকে ও মাথায় আঘাত করে। তাতে ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরদিন ওই ছাত্রীকে ব্যথানাশক ওষুধ খেতে দেয়।

 ছাত্রীর খালা তাকে মাদ্রাসায় দেখতে গেলে ধর্ষণের বিষয়টি জানায়। এরপর ওই ছাত্রীকে তার পিতা বাড়ি নিয়ে যান।


রবিবার ছাত্রীর পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা ওই শিক্ষককে আটক করে চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মধ্য প্রামাণিক পাড়ার একটি মক্তবে আটকে রাখে এবং মারধর করেন। এ সময় ওই শিক্ষক ধর্ষণচেষ্টার কথা স্বীকার করে । 


তার স্বীকারোক্তির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।


ওই স্বীকারোক্তিতে শিক্ষককে বলতে শোনা যায়, স্ত্রীসহ ওই মাদ্রাসায় থাকে। এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে যায়। ওই দিন রাতে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ছাত্রী বাধা দিলে তাকে মারধর করে।


ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, শুধু আমার মেয়ে নয় তিনি আরও কয়েকজন ছাত্রীর ক্ষতি করেছে। সে সেটা স্বীকারও করেছে। আমরা ওর কঠোর শাস্তি চাই।


অভিযুক্ত শিক্ষক রিয়াজুলের স্ত্রী বলেন, স্বামীর বক্তব্যের বাইরে আমার বক্তব্য নেই। তাকে মেরে জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে


উলিপুর থানা চত্বরে উপস্থিত রিয়াজুলের বড় ভাই বিজু মিয়া বলেন, ‘আমার ভাই আমাকে ও তার স্ত্রীকে বলেছে যে, তাকে মেরে জোর করে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে কেন ফাঁসানো হয়েছে, সেটা আমি জানি না।’


উলিপুর থানার ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। চিলমারী থানা পুলিশ আসামিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে


এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, শিক্ষকই যদি এরকম হয়, তাহলে সন্তানদের কিভাবে আবাসিক প্রতিষ্ঠানে অভিভাবকরা রাখবে।

এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন