দুমকি উপজেলায়,পূজা শুরু, শেষ হয়েছে প্রতিমার কাজ।
জাকির হোসেন হাওলাদার।
দুমকী পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
দুমকি সহ সারাদেশে আজ শনিবার থেকে শুরু হলো সনাতন ধার্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেবী দুর্গার বোধনের মধ্য দিয়েই সূচনা হলো এই পূজার পবিত্র আনুষ্ঠানিকতার। যদিও মূল পূজার কার্যক্রম শুরু হবে আগামীকাল রবিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে, তবে আজকের বোধনেই বেজে উঠেছে পূজার আনন্দঘন ঢাকের বাদ্য।সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্র মতে, ‘বোধন’ মানে জাগরণ বা চৈতন্য লাভ। দেবী দুর্গাকে আহ্বান জানিয়ে পূজার সূচনা করার নামই বোধন। পুরাতন শাস্ত্র মতে, রামায়ণের কাহিনীতে রাবণ বধের উদ্দেশ্যে শ্রীরাম শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। সেই থেকে শরতের এই পূজাকে ‘অকালবোধন’ নামেও ডাকা হয়। তবে বসন্তের বাসন্তী পূজায় আলাদা করে বোধনের প্রয়োজন হয় না।সাধারণত ষষ্ঠী তিথির সন্ধ্যায় বোধন অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর পঞ্জিকার হিসাব অনুযায়ী উপযুক্ত সময় না থাকায় শাস্ত্রীয় নিয়মে আজ পঞ্চমীর সন্ধায়ই বোধন সম্পন্ন হচ্ছে।এবার দেবী দুর্গা আগমন করেছেন গজে বা হাতির পিঠে। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস- হাতির পিঠে আগমনকে অত্যন্ত শুভ লক্ষণ ধরা হয়, যা শস্য-সমৃদ্ধি ও শান্তির প্রতীক। তবে দেবীর মর্ত্য ত্যাগ হবে দোলায়, অর্থাৎ পালকিতে, যা আসন্ন পরিবর্তন বা অস্থিরতার ইঙ্গিত দেয়।
প্রতিমা সাজানো, মন্ডপে আলোকসজ্জা, ধূপ-ধুনো, ঢাক-ঢোল আর ভক্তদের পদচারণায় এখন গ্রাম থেকে শহর- সবখানেই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
দুমকী উপজেলায় এবার ৯ টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ১১ টি। পূজাকে ঘিরে আয়োজকরা সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছেন।
দুমকী উপজেলার সিনেমাহল এলাকার পূজা উপজেলার অন্যতম আকর্ষণ। শান্তি শিল জানান, ‘‘আমাদের দুমকিতে এ বছরও দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে কখনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে উৎসব পালন করে থাকে।’’
শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সেনা বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংবেদনশীল এলাকাগুলো র্যাবের নজরদারিতে থাকবে।
পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া অধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপ বিবেচনায় ৮ জন, গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপে ৬ জন এবং সাধারণ মন্ডপে ৬ জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যা মোতায়েন করা হয়েছে বলে বাহিনীসূত্রে জানা গেছে। স্বেচ্ছাসেবক ও পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরাও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য উপজেলার সর্বত্র সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
আজকের বোধনের মধ্য দিয়ে আগামীকাল মহাষষ্ঠীতে কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী পালিত হবে। শেষ দিন বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে এই মহোৎসবের।।#
জাকির হোসেন হাওলাদার।
দুমকী, পটুয়াখালী।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন