দিনাজপুরে থ্রি হুইলার চালকদের মহাসড়ক অবরোধ নির্যাতন-হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে আন্দোলন
মো:মেহেদী হাসান ফুয়াদ
দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের ১০ মাইল এলাকায় ব্যাটারি চালিত যানবাহন ও থ্রি হুইলার চালকদের ওপর নির্যাতন, হয়রানি এবং চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ।
পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসের বাণীতে দুই ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নিল আন্দোলনকারীরা
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামে থ্রি হুইলার চালক পরিষদ।
প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ চলার ফলে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, সৈয়দপুর ও নীলফামারীর সাথে দিনাজপুরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে মহাসড়কে হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
অবরোধ চলাকালে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ১০ মাইল সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি বাদশা অভিযোগ করে বলেন,
“দিনাজপুর শহরে যাত্রী নিয়ে গেলে বাস মালিক সমিতির লোকজন আমাদের চালকদের ওপর হামলা চালায়, চাঁদা দাবি করে। কলেজ মোড় এলাকায় অনেক সময় গাড়ি আটকে চাবি কেড়ে নেয়া হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের চালকদের শারীরিক নির্যাতনও করা হয়।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ বলেন,
“বাস মালিক সমিতির প্ররোচনায় অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশও আমাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। এই অবস্থায় আমাদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা পরিবার চালাবো কিভাবে?”
অবরোধে অংশ নেওয়া চালক আব্দুল মালেক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরির মতো সিএনজি চালিয়ে খাই। তারপরও প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয়। না দিলে গাড়ি নিয়ে যায়, মারধর করে। এর প্রতিকার না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
আরেকজন চালক সোহেল রানা বলেন,
“আমাদের গাড়ি নিয়ে শহরে ঢুকলেই হয়রানি শুরু হয়। বৈধভাবে চালাচ্ছি, তবুও বারবার নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এই অন্যায় আর সহ্য করবো না।”
অবরোধ চলাকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা আন্দোলনকারীদের সাথে একাধিকবার আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা জানান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তারা অবরোধ প্রত্যাহার করবেন না।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুজ্জামান বলেন,
“আন্দোলনকারীদের সাথে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের দাবির বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রুত সমাধান করা হবে। পাশাপাশি বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরা যেন কোনোভাবেই থ্রি হুইলার চালকদের ওপর নির্যাতন না চালায়—সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবর পাওয়া মাত্রই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওসির এই আশ্বাস এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশেষে আন্দোলনকারীরা দুই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন