সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



রাজশাহীতে সেনা অভিযানে হত্যাসহ ২২ মামলার আসামি কথিত সাংবাদিক জুলুসহ গ্রেপ্তার-৩


০৩-০৭-২০২৫


পাভেল ইসলাম মিমুল স্টাফ রিপোর্টার 


রাজশাহী মহানগরীর টিকাপাড়া ও খুলিপাড়া এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দক্ষ ও সাহসী অভিযানে হত্যাসহ ২২ মামলার আসামি,স্বঘোষিত সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা নজরুল ইসলাম জুলুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়।


বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে নজরুল ইসলাম জুলুর বাড়িতে অস্ত্র উদ্ধারে বিপুল তল্লাশি চালানো হয়।


গ্রেপ্তার অপর দুইজন হলেন—জুলুর ছেলে জিম ইসলাম (২৫) ও তার সহযোগী মো. মুন্না (২৩)।


জুলুর বিরুদ্ধে ঢাকায় ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলাসহ মোট ২২ টি মামলা রয়েছে,যার মধ্যে শেখ হাসিনার নামও ওই মামলার আসামি তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া আরও ২১টি মামলার তথ্যও উঠে এসেছে,যার বেশিরভাগই চাঁদাবাজি,হত্যা চেষ্টাসহ নানা অপরাধ সংশ্লিষ্ট।


এর আগের দিন মঙ্গলবার,জুলুর দুই ভাতিজার নেতৃত্বে নগরীর বাসার রোড এলাকায় ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সিয়াম ইসলাম নামের এক যুবক।


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকেই জুলু স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি ও তার কথিত সাংবাদিকদের একটি চক্র রাজশাহী প্রেসক্লাব দখল করে চাঁদাবাজি,হয়রানি ও নির্যাতনের রাজত্ব কায়েম করেন। তার ছেলে ও ভাতিজারাও এসব অপকর্মে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।


সেনাবাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে শুধু একজন পলাতক অপরাধী নয়,বরং গোটা একটি সন্ত্রাসী চক্রের অপতৎপরতায় বিরাট ধাক্কা দেওয়া হয়েছে,যা শহরবাসীর মনে স্বস্তি ও সাহস ফিরিয়ে এনেছে।


এদিকে নজরুল ইসলাম জুলুর গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং রাতেই জুলুর দখলে থাকা রাজশাহী প্রেসক্লাবে তালা ঝুলিয়ে ক্লাব পুনর্দখল করেন।


রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সাইদুর রহমান বলেন, “জুলু প্রেসক্লাব দখল করে একে টর্চার সেলে পরিণত করেছিলেন। বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে নিজের পুত্রবধু ও আত্মীয়-স্বজনকে যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।”


বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক হোসেন বলেন, “জুলুসহ গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলমান থাকবে।”


বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ,সচেতন নাগরিক ও সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, “এমন সাহসী পদক্ষেপেই সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন সম্ভব।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন