সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



উলিপুরে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন: “আর ভিক্ষা করব না”—ছাগল পেয়ে আবেগাপ্লুত পঙ্গু বছির


রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 

“অহন আর ভিক্ষা করুম না। পঙ্গু মানুষ, কিছু করি খাবার পাই না, তাই ভিক্ষা করতাম। কিন্তু ভিক্ষা করা বড় শরমের কাজ গো। স্যার দয়া কইরা আমারে ছাগল দিছে। ছাগল পালমু, আর খামু।” আবেগময় কণ্ঠে এসব কথা বলছিলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ছড়ার পাড় ভাটিয়া পাড়া গ্রামের পঙ্গু ব্যক্তি বছির উদ্দিন। ছাগল হাতে পেয়ে খুশিতে তার দু’চোখ বেয়ে অশ্রু গড়াচ্ছিল।


একইভাবে অনুভূতি প্রকাশ করেন লাঠির খামার ধরনীবাড়ী গ্রামের অন্ধ হাফেজ মাজেদ আলী। তিনি বলেন, “ভিক্ষা করা লজ্জার কাজ, কিন্ত কি করব! জীবন তো বাঁচাতে হইব। ছেলে-মেয়ে নিয়া খুব কষ্টে কোনমতে বাঁচি আছি। ছাগল পালমু, বাঁচার চেষ্টা করমু।”


গত ১৭ জুলাই, বৃহস্পতিাবার, উলিপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৮ জন ভিক্ষুক ও পঙ্গু ব্যক্তির মাঝে ৩০টি উন্নতজাতের ছাগল বিতরণ করা হয়। এই পুনর্বাসন কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা।

তিনি বলেন, “ছাগলগুলো পালন করে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যারা সৎভাবে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন, ভবিষ্যতে তাদের আরও সহযোগিতা করা হবে।”


এই পুনর্বাসন কার্যক্রমে ছাগল পান, ছফুরা বেওয়া (আব্দুল হাকিম গ্রাম) আজিমন বেওয়া (দক্ষিণ মধুপুর) মো. লিটন মিয়া (তবকপুর তফসিপাড়া, পঙ্গু), হাফেজ মাজেদ আলী (লাঠির খামার, অন্ধ)

বছির উদ্দিন (পুর্ব ছড়ার পাড়, পঙ্গু) ভারতী বর্ম্মন (মুন্সিবাড়ী), সুমি বেগম (রামদাস ধনিরাম, তালাকপ্রাপ্ত), মো. মকবুল হোসেন পুর্ব কালু ডাঙ্গা বৃদ্ধ ভ্যানচালক ।

প্রতিটি পরিবারকে তিনটি করে ছাগল দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একটি প্রজনন উপযোগী পুরুষ ছাগল। এসব ছাগল পালনের মাধ্যমে পরিবারগুলো পর্যায়ক্রমে স্বাবলম্বী হতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।


ইউএনও নয়ন কুমার সাহা জানান, এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার ভিক্ষাবৃত্তি নিরুৎসাহিত করতে চায় এবং স্থানীয় প্রশাসন এ লক্ষ্য পূরণে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে।

Post a Comment

أحدث أقدم