সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 



দিনাজপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল সাজানো নাটক


মো:মেহেদী হাসান ফুয়াদ 

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি 


 দিনাজপুরের বিরলে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি একটি সাজানো নাটক ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে বিরল উপজেলার একটি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মোটরসাইকেলে দিনাজপুর শহরে যাওয়ার সময় এ ছিনতাইয়ের ঘটনার নাটক সাজানো হয়। 

বুধবার রাতে পুলিশ দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হালিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নাটক সাজানো ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম বিরল উপজেলার ৬ নং ভান্ডারা ইউনিয়নের গোপালপুর বড় বাড়ি গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে। তিনি একজন সার-কীটনাশক,ধান চাল ও ভুট্টা ব্যবসায়ী।

পুলিশ জানায়, মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে এমন ঘটনাটি জানার পর ডিবিসহ দিনাজপুর জেলা পুলিশ এর রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে। টানা তৎপরতা ও বিভিন্ন রকমের তদন্তের মাধ্যমে অবশেষে বিষয়টি প্রকাশ পায়। লোনের হাত থেকে রেহাই পেতে ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম নিজেই এই ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ছিলেন।

অপরদিকে ঘটনার পর বুধবার রাত দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল হালিম তার ভেরিফাইট ফেসবুকে লিখেন, ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই অতঃপর পুলিশের জালে আসল অপরাধী। অবশেষে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন করলাম। ব্যাংকের লোনের টাকা শোধ করতে না পারায় টাকা ছিনতাই নাটকের অবতারণা করলেন মো. মইনুল ইসলাম নামে বিরল উপজেলার এক ব্যবসায়ী। তার নিজ বাসায় তল্লাশি করে ছিনতাই নাটকের টাকাসহ অন্যান্য মালামাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে এনআরবিসি ব্যাংক হতে উত্তোলনকৃত ৮ লাখসহ মোট ১১ লাখ টাকা, মোটরসাইকেলের চাবি ও মোবাইল ফোনও পাওয়া যায় এবং নাটক শেষ হয়।

তিনি আরও লেখেন, পুলিশের প্রতি আস্থা রাখুন, পুলিশকে সহায়তা করুন।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর পুলিশ সুপার মোঃ মারুফাত হুসাইন বলেন, আমি অনেকটা কনফার্ম ছিলাম, ঘটনাস্থলে গেলে ছিনতাইকারী বা যারা টাকা নিয়েছে আমরা তা দ্রæত উদ্ধার করতে পারবো। এই জন্য দ্রæতই ছুটে আসি। টাকা ছিনতাইয়ের যে বিষয়টি আমরা শুনেছিলাম সেখানে নাকি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সেই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমিসহ ডিবির দল এবং আমার যারা অফিসার আছে সবাই চলে আসি। এ ছাড়াও বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছবুরসহ সব টিম মাঠে নামার পর বাস্তবতায় জানতে পারি যে, ব্যবসায়ী মইনুলের নানাবিধ লোন আছে। তিনি আরও বলেন, সেই লোনের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য তিনি নিজেই এই পলিসিটি খাটায়। ঘটনার পর আমি ব্যাংকের লোকের কাছ থেকে এবং তার কাছ থেকেও শুনেছিলাম। তিনি ব্যাংক থেকে ৮ লাখ টাকা তুলেছিলেন। সেই টাকা এবং তার সঙ্গে আরও তিন লাখ টাকাসহ ১১ লাখ টাকা আমরা তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করি। সেই টাকা আমরা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি।

ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম জানান, আমি থানায় একটি জিডি করার জন্য এই নাটকটি করেছি। তবে বিষয়টি যে এতদূর গড়াবে তা আমি বুঝতে পারিনি।

পরে দোষ স্বীকার করায় আজ বৃহস্পতিবার তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিরল হতে দিনাজপুর যাওয়ার পথে বানিয়াপাড়া রেলগেটসংলগ্ন মহাজন বাড়ি ব্রিজের কাছে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম জানান। টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় সোরগোল পড়ে যায় এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনে দিনাজপুর জেলা পুলিশ মাঠে নামে।

Post a Comment

أحدث أقدم