মায়ের জানাজায় প্যারোলে মুক্তি পেলেন যুবলীগ নেতা রিপন
মোফাজ্জল হোসেন, শ্রীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে তিন ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম রিপন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে উপজেলার মাওনা গ্রামে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্যারোলে মুক্তির সীমিত সময়েও মায়ের মুখ শেষবার দেখার সুযোগ না পাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন এই নেতা।
"আমি এক অভাগা সন্তান। মাকে শেষ ডাকটাও দিতে পারলাম না।"—সাদা কাফনে মোড়ানো খাটিয়ায় মায়ের নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন রিপন। তাঁর এই আবেগঘন মুহূর্তে উপস্থিত হাজারো মুসল্লিও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
রিপনের মা নূরুন্নাহার (৫৬) বুধবার ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলামের স্ত্রী। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
রিপনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মায়ের মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়। পরে আবেদন মঞ্জুর করে তিন ঘণ্টার প্যারোল মঞ্জুর করা হয়, যাতে জানাজায় অংশ নিতে পারেন রিপন। পুলিশের কড়া পাহারায় তিনি জানাজায় অংশগ্রহণ করেন এবং নির্ধারিত সময় শেষে আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন বলেন, “আবেদন যাচাই-বাছাই করে এবং মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য তরিকুল ইসলাম রিপনকে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।”
গাজীপুর জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রফিকুল কাদের বলেন, “প্যারোলের আদেশ পাওয়ার পর তাকে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুলিশের তত্ত্বাবধানে মুক্ত রাখা হয়। পরে পুনরায় কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়।”
স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, রিপন ওই সময় এক ঘণ্টা বাড়িতেও অবস্থান করেন। এ সময় তাকে ঘিরে স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়।
উল্লেখ্য, তরিকুল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলা, সহিংসতা এবং নাশকতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি তাকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
إرسال تعليق