সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 




তেলিগাঁও সার্বজনীন শ্মশানে নেই মুক্তজলের ব্যবস্থা,খাস জমিতে পুকুর খননের উদ্যোগ 


আহম্মদ কবির,তাহিরপুরঃ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের তেলিগাঁও সার্বজনীন শ্মশান ঘাটে হেমন্ত মৌসুমে নিকটবর্তী স্থানে মুক্তজলের ব্যবস্থা না থাকায়,শবদেহ সৎকার করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের,এতে নিকটবর্তী প্রস্তাবিত খাস জমিতে পুকুর খননের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী। 


শনিবার বিকাল ৩টায় তেলিগাঁও সার্বজনীন শ্মশান ঘাটের নিকটবর্তী তেলিগাঁও মৌজার ৫৪নং জে এল এর,৩৫০ নং দায়ের ৬৮ শতক প্রস্তাবিত খাস জমিতে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে পুকুর খননের এ উদ্যোগ নেয় তারা।


এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার,স্থানীয় ইউপি সদস্য আমীর আলী,শ্মশান ঘাট নির্মাণের অর্থ ও জমিদাতা রণধীর পাল বেনু,শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা দুলাল চন্দ্র পাল,তেলিগাঁও পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত পাল,বানিয়াগাও গ্রামের বাসিন্দা মুসলিম উদ্দিন,একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস,বালিয়াঘাট গ্রামের বাসিন্দা আলী আহমদ,সাবেক ইউপি সদস্য উৎফুল্ল পাল,ভোরাঘাট গ্রামের বাসিন্দা প্রণয় পাল,তেলিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিতাই পাল,নয়াবন্দ গ্রামের বাসিন্দা রানা পাল,একই গ্রামের বাসিন্দা কানু পাল প্রমুখ।



উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন জানান আমাদের এই প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলে এক সময় শবদেহ সৎকার করার কোন নির্ধারিত স্থান ছিল না,এতে আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন মারা গেলে শবদেহ সৎকার করা হতো মাটিতে পুতে অথবা কাচা মাটিতে পুড়ে সৎকার করা হতো কিন্তু বর্ষায় এই ব্যবস্থাও ছিলনা।এই অবস্থা দেখে আমাদের তেলিগাঁও গ্রামের কয়লা ব্যবসায়ী রণধীর পাল বেনু তেলিগাঁও মৌজায় নিজের পৈতৃক জমিতে ৮শতক জায়গায় প্রায় ৪০বছর পূর্বে একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে এই জায়গাতেই সৎকার করার জন্য একটি পাকা স্থানের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া গরীব অসহায় যারা শবদেহ সৎকার করার লাকড়ির ব্যবস্থা করতে না পারেন তাদের জন্য শ্মশানের পাশেই প্রায় ৫শতাধিক করচের চারা রোপণ করে লাকড়ির ব্যবস্থা করে রেখেছেন তিনি। কিন্তু কালের বিবর্তনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বালি পড়ে পাটলাই নদীর উত্তর পাশ ভরাট হওয়ায় শ্মশানে শবদেহ সৎকার করতে মুক্তজলের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রায় ১৫টি গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজনের। মুক্তজলের ব্যবস্থা করতে শ্মশান ঘাটের নিকটবর্তী তেলিগাঁও মৌজার ৫৪নং 

 জে এল এর,৩৫০ নং দাগের খাস জমিতে পুকুর খননের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেন,শ্মশান ঘাট নির্মাণের অর্থ ও জমিদাতা রণধীর পাল বেনু এরই প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত খাস জমিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের সাথে নিয়ে পুকুর খননের উদ্যোগ নেই।


এ ব্যাপারে রণধীর পাল বেনু বলেন এই শ্মশানটি আমি আমার জায়গায় আমার অর্থায়নে,আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজনের স্বার্থে নির্মাণ করেছি।এখন মুক্তজলের কারণে শ্মশানে শবদেহ সৎকারে করতে লোকজনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়,এ জন্য আমি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছি এতে উনার মৌলিক অনুমতি পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের সম্মতিতে উনাদের সাথে নিয়ে আমরা কয়েকটি গ্রামের লোকজন প্রস্তাবিত খাস জমিতে আমার নিজ অর্থায়নে পুকুর খননের উদ্যোগ নিয়েছি আজকে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়েছি কালপরশু খনন কাজ শুরু হবে।


স্থানীয় ইউপি সদস্য আমীর আলী বলে এই শ্মশান ঘাটে পানির খুব দরকার,পুকুর না থাকায় পুরানো খোলামেলা ফেলে রাখলে পরিবেশের ক্ষতি হয়।তাই পুকুর খননের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জোড়ালো দাবি জানাই। 


স্থানীয় শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হায়দার বলেন আমার ইউনিয়নের তেলিগাঁও শ্মশান ঘাটের সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন শবদেহ সৎকারে পানির অভাবে হেমন্ত মৌসুমে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে আমাদের তেলিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা রণধীর পাল বেনু জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি এনেছেন,এতে আমারাও সুপারিশ রয়েছে কিন্তু স্থানীয় কিছু লোকের বাধার মুখে উনি পুকুরের খনন কাজ করতে পারছেন না তাই আমি প্রস্তাবিত স্থানে উপস্থিত হয়ে এই কাজের উদ্বোধন করলাম এবং এই খনন কাজ হউক এই দাবি রাখলাম। 


আহম্মদ কবির 

মোবাইল ০১৭২৫৭২৪৬০০

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন