সন্ধানে বাংলাদেশ সংবাদ

 


ছুটি নিয়ে বাড়ীতে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে ক্লিনিক কর্মচারীর আত্মহত্যা


নইমুল ইসলাম নায়ুম, 

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ



উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ৪ হাজার টাকা বেতনে ঠাকুরগাঁও শহরের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সমেশ চন্দ্র সিংহ (২২)। এই অল্প বেতন আর বাড়ী থেকে কৃষক বাবার নিকট কিছু টাকা নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু জীবন যুদ্ধে অভাবের কাছে হেরে গেলেন সমেশ।


বুধবার (৭ মে ) দুপুরে নিজ বাড়ীতে শয়ন ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে সমেশ। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের ভান্ডারদহ গ্রামের ক্ষিরত চন্দ্র সিংহের ছোট ছেলে সমেশ চন্দ্র সিংহ। প্রায় ৩ বছর হলো তার মা মারা গেছেন। বিকালে খবর পেয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সমেশের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।


সমেশের বাবা ক্ষিরত চন্দ্র জানান, দুদিন আগে সমেশ আমার কাছে টাকা চেয়েছিল। এক হাজার টাকা পাঠিয়েছিলা বিকাশে, সমেশ বলেছিল বেতন হয়নি। মঙ্গলবার রাতে বাড়ীতে আসে সমেশ, প্রতিদিনের মত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।


সকালে ডাকতে গেলে জানায় ঘুম হয়নি, এরপরে আমরা মরিচ তুলতে চলে যাই। দুপুরে আমার এক ভাতিজা দৌড়ে গিয়ে বলে সমেশ গলায় ফাঁস দিয়েছে। এরপরে ছুটে এসে বাড়ীতে দেখি ছেলেটা আমার আর নেই। প্রতিবেশীরা জানান, মায়ের মৃত্যুর পর একা হয়ে পড়ে ছেলেটা। সমেশ অনেক কষ্ট করে শহরে পড়াশোনা করেছে ।


চেষ্টা করছিল একটা চাকরি করে নিজের পায়ে দাড়াতে, প্রতিষ্ঠিত হতে, কিন্তু সহযোগিতা ও সাপোর্ট পায়নি। অভাবের সংসার, অল্প জমি আবাদ করে চলতে হয় সমেশের দুই ভাই ও বাবাকে।


ক্লিনিকের ম্যানেজার রেজা জানান, তার বাবা অসুস্থ বলে ছুটি নিয়ে বাড়ীতে এসেছিলেন সমেশ। সকালে পরিবারের লোকজন জানায় সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। এক বছর হয়নি, সমেশ ক্লিনিকে কাজ শিখছিল।


বালিয়াডাঙ্গী থানা ওসি (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী জানান, অভাবের কারণে হতাশায় ভুগছিল সমেশ। হার্ডের সমস্যাও ছিল তার, অভাবের কারণে চিকিৎসা করাতে পারেনি।


তাই আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। কারো কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ সৎকারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন