কেন্দুয়ায় বসতঘরে হামলা-ভাঙচুর অতঃপর লোপাট
মোঃ মোফাজ্জল হোসেন (কেন্দুয়া) নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কেন্দুয়া পৌরসভাধীন কমলপুর গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের বসতঘরে হামলা-ভাঙচুর শেষে অনধিকার প্রবেশ করে লুটপাট করেছে বলে জানা গেছে প্রতিপক্ষ লোকজন।
ঘটনাটি চলতি মাসের ১৪ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১১টার দিকে কমলপুর গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের বসতঘরে ঘটে।
এবিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে ১৭ এপ্রিল প্রতিবেশী মিজানুর রহমান, নাজমুল ইসলাম, নুরজাহান ও রায়হান মিয়াকে আসামী করে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়- বাদী ও বিবাদীগণ পরস্পরের নিকটাত্মীয় আবার প্রতিবেশীও। বাদী নিরীহ মানুষ, স্ত্রী ও সন্তাদের নিয়ে বসবাস করেন। পক্ষান্তরে আসামীগণ একই পরিবারভুক্ত বাদীর আপন মামাতো ভাই ও মামী। আসামীগণ অত্যন্ত ভূমিলোভী ও দাঙ্গাপ্রিয় মানুষ, তারা বাদীর স্বত্ত্বদখলীয় জায়গা জোরপূর্বকভাবে বেদখল করতে গেলে বাদী বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। সেই শত্রুতার জেরে আসামীগণ ঘটনার তারিখ ও সময়ে বাদীর ও তার পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে।
মামলার ১নং আসামী মিজানুর রহমান ধারালো রামদা দিয়ে বাদী ও তার পরিবারের লোকজনদের খুন করার উদ্দেশ্য বাদীর মাথা লক্ষ্য করে কোপ দিলে বাদীর পিঠের বামপাশের অংশে লেগে মারাত্মক জখম হয়। পরবর্তীতে বাদীর স্ত্রী ঘরে থাকায় তার ডাক চিৎকার শুনে ২নং আসামী নাজমুল ইসলাম (রুমান) লোহার হাতুড়ি দিয়ে বাদীকে জখম করে। ৪নং আসামী রায়হান বাদীর স্ত্রীর পরনে থাকা কামিজে টানাটানি করে শ্লীলতাহানি ঘটায় ও তার গলার ১০ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন যার বর্তমান বাজার মূল্য ৯৩ হাজার টাকা টান দিয়ে ছিড়ে নিয়ে যায়। ৩নং আসামী হুকুমদাতা নুরজাহান বাদীর স্ত্রীর চুলের মুঠি ধরে টানাটানি করে চুল ছিড়ে ফেলে মাথা নিলাফুলা জখম করে। পরবর্তীতে বাদী ও তার স্ত্রীর ডাক চিৎকার এবং ভাঙচুরের বিকট শব্দ শুনে ঘটনাস্থলের আশেপাশের লোকজন (সাক্ষীগন) ঘটনাস্থলে এসে আসামীদেরকে অনয়-বিনয় করিলে ১নং আসামী মিজানুর রহমান, ৪নং আসামী রায়হান দ্বয়ের হাতে থাকা রামদা, লোহার শাবল দিয়ে এলোপাতাড়ি বাইরাইয়া বাদীর ঘরে থাকা স্টিলের লক ভাঙিয়া ১নং আসামী মিজানুর রহমান আলমারি থেকে ০১ (এক) ভরি স্বর্ণের গলার হার আনুমানিক মূল্য ১লাখ ৫০ হাজার টাকা, দেড় ভরি ওজনের হাতের বালা যার বর্তমান বাজার মূল্য ২লাখ ২৫ হাজার টাকা, ২নং আসামী নাজমুল ইসলাম (রুমান) নগদ ৩লাখ ৫০ হাজার টাকা সন্ত্রাসী কায়দায় নিয়ে যায়। আসামীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে যার আনুমানিক মূল্য ৮০ হাজার টাকা।
উল্লেখিত আসামীগণ যাবার সময় বাদী ও তার পরিবারের লোকজনদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে যেকোন সময় যেকোন স্থানে তাদের পাইলে খুন গুম করে ফেলবে। পরবর্তীতে মামলার বাদী প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কেন্দুয়া আদমপুর হাসপাতালে সাক্ষীগণের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান- আসামীগণ আমাদের ওপর হামলা ও লোপাট এবং রক্তাক্ত করে মেরে পুলিশের ভয়ে পালানোর সময় তারা নিজেরাই আহত হয়ে আমাদের ওপর কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা করেছে যার কোন ভিত্তি নেই, যদি ভিত্তি থাকতো তাহলে কেন্দুয়া থানাতেই তারা মামলা করতে পারতো। আসামীদের ভয়ে এখন আমি বাড়ি ছাড়া আমি খুবই আতঙ্কের মধ্য আছি। যেকোন সময় তারা আমাকে ও আমার পরিবারের ওপর আবার হামলা করতে পারে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানার (এসআই) মো. কামাল হোসেন জানান- দু'পক্ষই মামলা করেছে। দু'পক্ষের দু'জন বাদে অন্যরা হাজিরা দিয়েছে। যে দু'জন হাজিরা দেয়নি সেই দু'জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
إرسال تعليق