রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী দামকুড়া পশুর হাট নিয়ে বিপাকে ইজারাদার, প্রশাসন নিরব
মোঃ মনোয়ার হোসেন, রাজশাহী
১৬ বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে পবা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দামকুড়া পশুহাট চালু হলেও বিপাকে পড়েছেন ইজারাদার। পশু হাটের আশপাশের বিভিন্ন টার্ন পয়েন্টে সিটি হাটের লোকজন গরু ভর্তি দামকুড়া হাট অভিমুখে যাওয়া গাড়ী গুলোকে সিটি হাট মুখে ঘুরিয়ে দিচ্ছে। এতে করে ইজারার সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে দামকুড়া হাট কর্তৃপক্ষকে। এদিকে ইজারার পুরো টাকা পরিশোধ না করেও দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে সিটিহাট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে কাশিয়াডাঙ্গা, মুরালিপুর, ছয়ঘাটি পর্যন্ত মহসড়কের বিভিন্ন মোড়ে, ২৪ নগর হাজী পাড়ার মোড় কাকনহাটের পাশে দরগাপাড়া মোড়, কদম শহর মোড়, জুগি ডাইন মোড়, দারুশা, বাগধানি, কৈকুড়ি মোড়, দারুশা মোড়, হরিপুর মোড় সহ বিভিন্ন মোড়ে দামকুড়া হাটে গরু ও গরু বহনকারী গাড়ি আসায় বাধা দিচ্ছে সিটি হাটের ভাড়া করা লোকজন।
অভিযোগ করে জেলা বিএনপির সদস্য, দামকুড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও দামকুড়া পশুহাটের ইজারাদার শাহজাহান আলী বলেন, তিনি দামকুড়া পশুহাটটি ১ কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন। ক্রেতা-বিক্রেতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে গরু প্রতি ৪০০ টাকা এবং ছাগল প্রতি ২০০ টাকা টোল মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্ত বিক্রেতার কাছ থেকে কোন টাকা নেয়া হচ্ছে না।
প্রথম হাটের দিনে গরু ও ছাগল ক্রেতাকে উৎসাহিত করা জন্য এক হাজার টাকা ও একটি ছাতা উপহার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিক্রেতাকে কোন টোল মূল্য দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন পশুহাটের ইজারাদার শাহজাহান আলী।
তিনি আরো বলেন, বিগত বছরের তুলনায় চার গুণ রাজস্ব দিয়ে হাট ডাক করে নিলেও স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করছে না । কিন্তু দুঃখের বিষয় এরকম সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে আমার হাটে বাধা তৈরী করলেও তারা নিরব ভূমিকা পালন করছেন।
তিনি জানান, ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম দামকুড়া পশুহাটটি চালু হয়। কিন্তু স্বৈরাচার সরকারের আমলে ২০০৮ সালের পর থেকে কৌশলে দামকুড়া পশুহাটটি বন্ধ রাখা হয়েছিল। সপ্তাহে বুধবার ও রবিবার এই দুইদিন নগরীর সিটি হাট ও দামকুড়া পশুহাট বসে। এই দুই হাটের বার একই হওয়ায় কৌশলে ইজারা নিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর বন্ধ রাখা হয়েছিল দামকুড়া পশুহাটটি। ফলে বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কাগজ কলমে সবকিছু ঠিক থাকলেও কৌশলে বঞ্চিত করা হয়েছিল প্রায় অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব থেকে। এক্ষেত্রে হাটবাজারের মূল্য যত বেশি হবে সরকার রাজস্ব তত বেশি পাবে। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে হাটটি আমি ইজারা নিয়েছি। এর ফলে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবার চালু হলো পবার ঐতিহ্যবাহী দামকুড়া পশুহাট।
তিনি আরও বলেন, সিটি হাটের কয়েক কোটি টাকা বাকি রেখে হাট পরিচালনা করছে। যা হাট ইজারা ও সরকারের নিয়ম নীতিমালার বহির্ভূত বলে জানা গেছে।
إرسال تعليق