যৌথ বাহিনীর অভিযানে মানব পাচারকারী ও প্রতারক জাহিদ'কে নওগাঁ থেকে গ্রেফতার
মোঃ মাইনুল ইসলাম
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলার ভিকটিম ইয়াকুব আলী গত ২৫ মার্চ ২০২৫ তারিখ এজাহার দাখিল করে যে, বিগত প্রায় ২ বছর পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোঃ জাহিদ হাসান সাং- সিংড়া পাড়া, থানা- রানীনগর, জেলা- নওগাঁ, নামে এক ইতালি প্রবাসী পরিচয় প্রদানকারীর সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার কিছুদিন পর থেকে উক্ত ব্যক্তি তার ইতালিতে নিজস্ব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান আছে এবং সে অনেক সংখ্যক মানুষকে ইতালিতে পাঠিয়েছে এবং উচ্চ বেতনে ভিকটিমকে চাকরির প্রলোভন দেখাতে থাকে। এক পর্যায়ে উক্ত ব্যাক্তির সাথে ভিকটিমকে ইতালি পাঠানোর বিষয়ে ২০ লক্ষ টাকার চুক্তি হয় এবং ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম এবং ইতালি পৌঁছানোর পর বাকি টাকা নেওয়ার কথা বলে। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি গত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকা ভিকটিমের কাছে নেয়।
টাকা নেওয়ার কিছুদিন পর তাকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে দুবাই, দুবাই থেকে নাইজার ও নাইজার থেকে বাই রোডে আলজেরিয়া নিয়ে যায় এবং আলজেরিয়া যাওয়ার পর ভিকটিম আলজেরিয়া পুলিশের হাতে ধরা পরে ২১ দিন জেলে থাকে। জেল থেকে বের হওয়ার পর উক্ত প্রতারকের সহোযোগি ভিকটিমকে নিয়ে তিউনেশিয়াতে যায় এবং তিউনেশিয়া থেকে বাই রোডে লিবিয়াতে নিয়ে একটি বাড়িতে আটক করে রাখে।
পরবর্তীতে উক্ত প্রতারক ও তার সহোযোগিরা ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে এবং সেই ভিডিও ধারন করে ভিকটিমের পরিবারের কাছে পাঠায় এবং মুক্তিপন হিসেবে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক একাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।
ভিকটিম ও তার সাথে আটকে থাকা আরো অনেকেই প্রতারকের মাধ্যমে বিদেশের মাটিতে আটকে থাকার খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারের পর চলে লিবিয়ায় বাংলাদেশি দুতাবাসের উদ্যোগে ভিকটিমকে উদ্ধার করে গত ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ দেশে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে।
এরই ধারাবাহিকতায় কুড়িগ্রাম থানায় উক্ত এজাহার দাখিলের পর থেকেই কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিম বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে উক্ত প্রতারকচক্র ও মানব পাচারকারীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত রাখে এবং এক পর্যায়ে RAB-5 নাটোরের সহোযোগিতায় উক্ত প্রতারক ও মানব পাচারকারী মোঃ জাহিদ হাসান (২৬) সাং- সিংড়া পাড়া থানা- রানীনগর, জেলা- নওগাঁ কে গ্রেফতার করে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে জানা যায় উক্ত প্রতারক বিভিন্নভাবে উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক সংখ্যক মানুষকে নিঃস্ব করেছে। এবং অনেককে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়া, তিউনেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে জিম্মি করে রেখেছে।
এর সাথে আরো জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে তদন্ত ও অনুসন্ধান অব্যহত রয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন